ফিরোজ এহতেশাম- এর কবিতা

পঞ্চগড়  

চতুর্দিকে পঞ্চগড়
তুমি আপন, আমিই পর
তবু,
সেবা আর শুশ্রূষার
চ‚ড়ান্ত বেদনার ভার
আমি
তোমাকে দিলাম,
পরিচর্যা করো ধীরে ধীরে ।

২.
লোপামুদ্রা, লোপামুদ্রা, লোপা
চুল না খুলিয়া বাঁধিয়াছ তুমি খোপা!
কেন কেন কি কারণে?
দেখতেছি তুমি হাসতেছ মনে মনে।

বাক্য-চমকে খসিয়ে দিচ্ছি খোপা
অবাক ফিতার ফুল
লাফিয়ে উঠছে পাহাড়-বন্দি ঘোড়া
সচকিত দুলদুল ।

দুল কেঁপে ওঠে উত্তেজনায় টিপ খসে যায় জলে
জল থেকে আজ হাত তুলে সে-ই আমাকে দাঁড়াতে বলে
প্রথমে শুধুই হাত তুলেছিল পরে ধীরে ধীরে দেহ
উঠে আসে আহা জানতে পারেনি কেহ
হাত থেকে মুখে পানির পাত্র পান করো তুমি কে?
জলদাত্রী তো পঞ্চগড়ের মেয়ে।

রাস্তার কবিতা

পথে দেখি অসামান্য মেয়ে
হেসে ওঠে বস্ত্রে ঢাকা মুখ
লোকে চলে অন্যদিকে চেয়ে
পাশপাশি বাহনও চলুক।

আমারও কাপড়ে ঢাকা দেহ
ভেতরে প্রাচীনতম গান
দিন ও রজনীতে তুমি গেয়ো
আপাতত বলো কি বিধান ?

কী-যে বিধি বিবিধ কারণ
তুলা উড়ে কোথা কেন যায়
করো মন্ত্র মরমে ধারণ
বুঝে ফেলি মাত্র ইশারায়।

রৌদ্র ছিল মেঘও ছিল কিছু
তীর্থে তীর্থে কাটতেছিল বেলা
মনোজগতের পিছু পিছু
রিপুচক্র করতেছিল খেলা।

বস্ত্র ছাড়ো তীর্থ দু’টো দেখি
উপভোগ সত্যি মনোহর
ভেতরে ঠিক বাহিরে সব মেকি
অভিপ্রায় তাহারও ভেতর।

সুধা-পাত্র উপচে পড়ে গেল
ওষ্ঠে রাখো সামান্য চুমুক
মেঘ তুমি রৌদ্রটুকু মেলো
লোকজন স্বচক্ষে দেখুক।

কুয়াশা

ঝাপসা হয়ে আসে ধীরে ধীরে সকল সম্পর্ক আমাদের।
শূন্যে জ্বলে থাকে বিস্মৃতপ্রায় আলোÑ
অসহায়, কুণ্ঠিত, আত্মকেন্দ্রিক
তার-ই নিচে আধা-জাগ্রত কবেকার মৃদু-পানশালা।
ঘোরগ্রস্ত শব্দ শোনা যায়।

অনেক হেমন্ত শেষে পাশাপাশি
কেমন আড়ষ্ট হয়ে বসে আছি বর্তমানে, আমরা সবাই
আগুনকে ঘিরে ফেলি। আমাদের কোনো নাম নাই।
আমাদের বাক্যগুলো কোনো অর্থ পাবার আগেই
পরিণত হচ্ছে কুয়াশায়।

ইতিহাস : তিল থেকে তাল

চোখের পাতার নিচেই রয়েছে শুয়ে
একাকী একটি তিল
নিরিবিলি, ছায়া ঢাকা।

আকাশের উঁচু পটভ‚মি থেকে নুয়ে
তা-ই দেখে নিলো চিল
দূরে, চুপচাপ, একা।

ফলে, স্থির পাখা দু’টি চঞ্চল
কেঁপে ওঠে তার ছায়া পড়ে সোজা চোখে
কালো মণিটিকে ঘিরেছে পাপড়িদল
কান্নায় মেশা কাজলের রং আমিই দিয়েছি ওকে ।

উন্নয়নমূলক গান

ওরে, উন্নয়নের জোয়ারে ভাইস্যা গেলাম খোঁয়াড়ে
সেথায় যায়া দেখি আমি ছেলের হাতের মোয়া রে\

সভা-সেমিনারে যারা করতে আছে দোয়া রে
তারায় কিন্তু বেবাক লোকে তুলসি পাতায় ধোয়া রে\

কারো পৌষ মাসের পিঠা কারো বারো পোয়া রে
সবার শ্যাষে দেখ সবার পাতে ইটের খোয়া রে

চারিদিকে দেখি সবাই উলটা দিকে শোয়া রে
আরে বাপরা গেল কাশী তবু মা-রা গেল গোয়া রে\

২.
আহ্
হায় খোদা!
এই বাংলাদেশ
তাতে হামলা দে।

ওহ্
যাকে জাগাব
সেই তো বেশ
ঠ্যালা সামলাবে।

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *